সরকারিভাবে প্রবাসীদের বিদেশ যাওয়ার সহজ ১০ টি প্রক্রিয়া
সরকারি ভাবে প্রবাসীদের বিদেশ যাওয়ার সহজ ১০টি প্রক্রিয়া ব্যবহার করে খুব সহজে
এবং খুব অল্প টাকা দিয়ে প্রবাসীরা সরকারি অর্থায়নে বিভিন্ন দেশে তার কাঙ্খিত
কাজ করার সুযোগ পেতে পারে। আমরা আমাদের আর্টিকেলে সরকারিভাবে বিদেশ
যাওয়ার সুযোগ-সুবিধা এবং কি কি উপায় অনুসরণ করলে খুব সহজে বিদেশ যাওয়ার
ভিসা পাওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা করেছি।
আর আমরা আমাদের আর্টিকেলে কিভাবে দেশে থাকা অবস্থায় কিভাবে বিদেশে কাজের
জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং খুব অল্প সময়ে বিদেশে ভিসার সকল জটিল
প্রক্রিয়া শেষ করে প্রতি সহজে কিভাবে বিদেশে ভিসা পাওয়া যাবে এসব নিয়ে আমরা
আমাদের আলোচনা করব।
পেজ সূচিপত্রঃসরকারিভাবে প্রবাসীদের বিদেশ যাওয়ার ১০টি প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
- সরকারিভাবে প্রবাসীদের বিদেশ যাওয়ার ১০টি প্রক্রিয়া
- বিদেশ যেতে কি কি প্রয়োজন বিস্তারিত জানুন
- প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে আর্থিক সহায়তা
- সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার প্রক্রিয়া
- মেডিকেল টেস্ট বা ফিটনেস টেস্ট প্রক্রিয়া
- সরকারিভাবে বিদেশে কর্মসংস্থানের নিশ্চিতকরণ
- প্রবাসীদের জন্য বিদেশে সহায়তা কেন্দ্র
- সরকারিভাবে যে সকল দেশে যাওয়া যায়
- সরকারিভাবে বিদেশে যাওয়ার খরচ সম্পর্কে জানুন
- শেষ কথাঃ সরকারিভাবে প্রবাসীদের বিদেশ যাওয়ার ১০টি প্রক্রিয়া
সরকারিভাবে প্রবাসীদের বিদেশ যাওয়ার ১০টি প্রক্রিয়া
সরকারিভাবে প্রবাসীদের বিদেশ যাওয়ার ১০টি প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমরা আজকে আমাদের
আর্টিকেলে জানবো। সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়া অর্থাৎ সরকারি অর্থায়নে খুব অল্প
সময়ে এবং সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে বিদেশে গিয়ে ভালো কোনো কাজ করা এবং
ভাল পরিমানে অর্থ উপার্জন করার প্রক্রিয়াকেই সরকারি ভাবে বিদেশ যাওয়া বিষয়টি
বোঝায়। আমরা সরকারি ভাবে বিদেশ যাওয়ার যে দশটি উপায় রয়েছে সেগুলো
হল প্রথমে পাসপোর্ট তৈরি প্রক্রিয়া, দ্বিতীয় সরকারি লাইসেন্স
প্রাপ্ত এজেন্সিতে গিয়ে সাহায্য গ্রহণ করা, তৃতীয় আমাদের কাঙ্ক্ষিত দেশের
দূতাবাসে যাওয়া, চতুর্থ সকল বৈধ কাগজপত্র এজেন্সির নিকট জমা দেওয়া,
পঞ্চম এজেন্সির সাহায্যে ব্যাংকিং সকল সমস্যার সমাধান করা, ষষ্ঠ সরকারি
টিটিসি থেকে ভাষা ও কাজের প্রশিক্ষণ নেওয়া, সপ্তম এজেন্সি সাহায্যে
কাঙ্ক্ষিত দেশে অগ্রিম কাজের জন্য আবেদন করা, অষ্টম প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক
হতে আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করা, নবম দালাল হতে বিরত থাকা এবং পরিশেষে বিমানবন্দরে
গিয়ে করণীয়গুলো সঠিকভাবে সম্পূর্ণ করা।
সুতরাং আমরা যদি সরকারিভাবে বিদেশে যেতে চাই তাহলে অবশ্যই আমাদের উপরোক্ত
বিষয়গুলো সম্পূর্ণভাবে মেনে এবং সরকারি সকল নিয়ম-কানুন জেনে আমাদের বিদেশে যেতে
হবে। আরো অন্যান্য যে সকল উপায় রয়েছে বিদেশে যাওয়ার তার চেয়ে অনেক সহজ ও
অনেক কম সময় এবং অনেক অল্প পরিমাণে অর্থ নিয়ে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে
সরকারিভাবে বিদেশে যাওয়া যায়। সরকারিভাবে বিদেশে গেলে ভুলবশত বিদেশে যাওয়ার পর
কোন সমস্যাই কবলে পড়লে খুব সহজেই যে কোন সমস্যা থেকে বের হতে সরকারি
বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। তাই আমরা যদি দালাল বা যেকোনো অসৎ পথ অবলম্বন
না করে সঠিকভাবে বিদেশ যেতে চাই তাহলে আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত সরকারি
নিয়ম-নীতি মেনে বিদেশে যাওয়া।
এতে করে বিদেশে গিয়ে কাজের কোন অভাব হবে না এবং বিদেশে গিয়ে অনেক ধরনের সুযোগ
সুবিধা পাওয়া যায় যা প্রতিটি প্রবাসীদের জন্য মঙ্গলজনক একটি বিষয়।
এছাড়াও সরকারি ভাবে বিদেশ গেলে আমাদের পরিবারের মানুষ নিশ্চিন্তে থাকতে
পারে এবং আমাদের বিদেশে যে কোন সমস্যা হলে পরিবারের মানুষজন সরকারের নিকট হতে
বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকে এবং সরকারের নিকট আমাদের পরিবারের মানুষজন
মাথা উঁচু করে থাকতে পারে আমরা প্রবাসীরা দেশের জন্য রেমিটেন্স যোদ্ধা আর এই
বিষয়টি আমাদের পরিবারের জন্য অনেক সম্মানের।
বিদেশ যেতে কি কি প্রয়োজন বিস্তারিত জানুন
সরকারিভাবে বিদেশ যেতে আমাদের বেশ কিছু বিষয় জানা প্রয়োজন এবং যে সকল বিষয়
ছাড়া বিদেশে যাওয়া যাবে না তার মধ্যে অন্যতম কিছু বিষয় হলো পাসপোর্ট, ভিসা,
সরকারি এজেন্সি, টিটিসি প্রশিক্ষণ ইত্যাদি আরো কিছু বিষয়। উপরোক্ত এই সকল
বিষয় সঠিকভাবে সম্পন্ন না করে আমরা কখনোই আমাদের কাঙ্ক্ষিত দেশে যেতে পারবো না।
সুতরাং উপরোক্ত চারটি বিষয় কিভাবে খুব সহজে সম্পন্ন করা যায় তা নিয়ে আমরা
এখন আলোচনা করব।
সরকারিভাবে পাসপোর্ট তৈরীর নিয়ম
আমরা প্রত্যেকেই জানি বিদেশে যাওয়ার জন্য সবার প্রথমে আমাদের যে বিষয়টি
প্রয়োজন সেটি হল পাসপোর্ট। আর সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে পাসপোর্ট তৈরি এখন অনেক
সহজ একটি বিষয়। আমরা আমাদের বাড়িতে বসেই আমাদের হাতে থাকা মোবাইল ফোন
দিয়ে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারি। আর যদি আমরা আমাদের মোবাইল ফোন
দিয়ে অনলাইনে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে না পারি তাহলে আমরা আমাদের আশেপাশে
থাকা যেকোনো ধরনের অনলাইন সাপোর্ট প্রদানকারী সংস্থা বা কম্পিউটারের মাধ্যমে
অনলাইনে যে কোন ধরনের সেবা প্রদান করে থাকে এরকম কোন দোকানে গিয়ে আমরা আমাদের
পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারি।
সরকারিভাবে ভিসা তৈরীর নিয়ম
সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার আরো একটি অন্যতম পূর্বশর্ত হলো ভিসা প্রসেসিং
প্রক্রিয়া বা ভিসা সংগ্রহ করা। কারণ আমরা জানি যে কোন দেশে যাওয়ার জন্য
পাসপোর্ট থাকার পাশাপাশি আমাদের ভিসা থাকা আবশ্যক। আর এ দুটি জিনিস আমাদের কাছে
থাকলে তবেই আমরা আমাদের কাঙ্খিত দেশে যেতে পারবো। সরকারি ভাবে ভিসা তৈরির জন্য
একটি সহজ নিয়ম হলো প্রথমে আমাদের জানতে হবে আমাদের কাঙ্ক্ষিত দেশের দূতাবাস
আমাদের দেশে কোথায় আছে। এরপর খুঁজে বের করার পর আমাদের সঠিক বৈধ কাগজপত্র নিয়ে
বাংলাদেশের নিযুক্ত দূতাবাসের নিকট যদি কোন ফি থাকে সেগুলো পরিশোধ
করে আমাদের কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
সরকারি এজেন্সির নিকট হতে সাহায্য গ্রহণ
সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার জন্য আমাদের বেশ কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। এর
মধ্যে রয়েছে সরকারি এজেন্সি নিকট হতে সাহায্য গ্রহণ প্রক্রিয়া। প্রথমে আমাদেরকে
সঠিক এজেন্সি অর্থাৎ সরকারি লাইসেন্স প্রাপ্ত বা অনুমোদিত বিদেশে
প্রবাসীদের পাঠাতে সাহায্য করে এরকম কোন এজেন্সি খুঁজে বের করতে হবে। এরপর
এজেন্সিতে গিয়ে আমরা আমাদের সকল বৈধ কাগজপত্র এবং যে দেশে যেতে ইচ্ছুক ও আমাদের
যে বিষয়ে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে এই সকল বিষয় পরিষ্কারভাবে তাদের কাছে তুলে
ধরা। আমরা যদি সঠিকভাবে আমাদের সকল বিষয়বলি এজেন্সির নিকট তুলে ধরি
তাহলে খুব সহজেই সরকার এজেন্সি গুলো আমাদেরকে বিদেশে যেতে সাহায্য করতে
পারবে।
সরকারি ভাবে টিটিসি নিকট হতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ
সরকারি ভাবে বিদেশে যাওয়ার জন্য আরেকটি বড় বিষয় আমাদের মাথায় রাখতে হবে সেটি
হল টিটিসি নিকট হতে প্রশিক্ষণ নিয়ে সে সকল সার্টিফিকেট বিদেশে কাজের জন্য আবেদন
করার সময় সেগুলো প্রদান করা। আমরা যদি আমাদের এলাকায় অবস্থিত টিটিসি নিকট
হতে কাঙ্খিত দেশের ভাষা এবং যে কাজ করতে ইচ্ছুক সে কাজের প্রশিক্ষণ নিয়ে আমরা
যদি একটি সার্টিফিকেট নিতে পারি এবং বিদেশে কাজের জন্য আবেদনের সময় আমরা
যদি টিটিসি নিকট হতে প্রাপ্ত সার্টিফিকেট প্রদান করতে পারে তাহলে আশা করা
যায় খুব সহজেই আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত দেশে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বিদেশে
যেতে পারবো।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে আর্থিক সহায়তা
আমরা আমাদের পরিবারের সচ্ছলতা ও আমাদের জীবনে আর্থিক সকল সমস্যার অবসান ঘটিয়ে
আমাদের জীবনের সুখ নিয়ে আসার জন্যই আমরা প্রবাস জীবনকে বেছে নিয়ে থাকি। কিন্তু
আমাদের মধ্যে অনেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা না থাকায় বিদেশে যেতে পারি না। আমরা
যদি সরকারিভাবে বিদেশ যায় তারপরও আমাদের কিছু অর্থ প্রয়োজন হয়, আর যেটা আমাদের
পরিবার দিতে পারেনা। এজন্য রয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। যেখান থেকে খুব সহজে
প্রবাসে যাওয়ার জন্য ঋণ গ্রহণ করা যায় এবং খুব অল্প পরিমাণে সুদ
দিয়ে ঋণ গ্রহণ করা যায় এবং খুব সহজেই সেই টাকা দিয়ে বিদেশে যাওয়া যায়।
সুতরাং আমরা যারা আর্থিক সংকটের কারণে আমাদের কাঙ্ক্ষিত দেশে যেতে পারছি না,
তাদের প্রত্যেকেরই উচিত প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করা।
কেননা সকল প্রবাসী ভাইয়েরা তাদের প্রেরিত রেমিটেন্স প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক
জমা হয়ে থাকে। আর এজন্যই প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক স্থাপন করা হয়, যাতে করে কোন
প্রবাসী ভাই বিপদে পড়লে খুব সহজে যেন তারা প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে
সাহায্য পেতে পারে।
সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার প্রক্রিয়া
আমরা যারা প্রবাসে যেতে ইচ্ছুক এবং প্রবাসে গিয়ে কোনরকম সমস্যা ছাড়াই খুব সহজে
চাকরি পেতে ইচ্ছুক তাদের প্রত্যেকেরই উচিত সরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হতে
প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকা। সরকারি প্রশিক্ষণ দেওয়ার একটি অন্যতম প্রধান
কেন্দ্রগুলো টিটিসি। প্রথমে আমাদের সকল বৈধ কাগজপত্র নিয়ে প্রশিক্ষণ
কেন্দ্রে যেতে হবে এরপর সেখানে সকল কাগজপত্র ফটোকপি করে জমা দিতে হবে। তারপর
সেখান থেকে বিদেশে যাওয়ার পূর্বে যে তিন দিনের একটি প্রশিক্ষণ থাকে সেটা
তিন দিন অংশগ্রহণ করে সেই প্রশিক্ষণ নিয়ে আমরা বিদেশে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত
হবো। এই তিন দিনের প্রশিক্ষণ বিদেশে যাওয়ার রাস্তা আমাদের জন্য আরো সহজ করে
তুলবে।
তিন দিনের প্রশিক্ষণ নেওয়ার ফলে আমরা বিদেশে যেকোনো কাজের জন্য আবেদন করার সময়
প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হতে প্রাপ্ত একটি সনদপত্র যা আমরা আমাদের কাজের আবেদনের সময়
প্রদান করতে পারব। এছাড়াও বিদেশে গিয়ে টিটিসি নিকট হতে প্রাপ্ত সনদপত্র যে কোন
কাজ পেতে এবং নিজেদের অভিজ্ঞ প্রমাণ করতে এসব কাগজে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
সুতরাং বিদেশে যাওয়ার পূর্বে প্রত্যেকেরই উচিত টিটিসি হতে
প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা এবং সনদপত্র সংগ্রহ করা।
মেডিকেল টেস্ট বা ফিটনেস টেস্ট প্রক্রিয়া
বিদেশে যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই আমাদের আরও একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে সেটি হল
মেডিকেল টেস্ট করা বা আমাদের শারীরিক ফিটনেস টেস্ট করা। কেননা আমরা যদি মেডিকেল
টেস্টে আমাদের ফিটনেসের সঠিক প্রমাণ দিতে না পারি তাহলে কখনোই আমরা বিদেশে যেতে
পারবো না। সুতরাং আমাদের বিদেশে যাওয়ার পূর্বে সরকারি মেডিকেল হতে আমাদের শরীরের
প্রতিটি অংশ টেস্ট করা এবং সরকারি মেডিকেল হতে ফিটনেস এর একটি সনদপত্র গ্রহণ করা।
আমরা যদি ফিটনেস টেস্ট সফলভাবে উত্তীর্ণ হতে পারি তাহলে খুব সহজেই বিদেশে আমরা যে
কোন একটি কাজ পেতে পারি।
উপরোক্ত বিষয় পড়ে আমরা এটা বুঝতে পারি যে, মেডিকেল টেস্ট করা বিদেশে যাওয়ার
পূর্বে কতটা জরুরি একটি বিষয়। সুতরাং আমরা যদি আমাদের ফিটনেসের সকল বৈধ কাগজপত্র
সঠিকভাবে বিদেশে কাজের জন্য আবেদন করার সময় প্রদান করতে পারি তাহলে বিদেশে কাজ
পেতে এবং বিদেশে যাওয়ার রাস্তাটি আমাদের জন্য আরও এক ধাপ সহজ হয়ে যাবে এবং
খুব সহজেই আমরা সকল সমস্যার অবসান ঘটিয়ে বিদেশে যেতে পারবো।
সরকারিভাবে বিদেশে কর্মসংস্থানের নিশ্চিতকরণ
সরকারিভাবে বিদেশে যাওয়ার পূর্বে আমাদের আরেকটি যে প্রধান বিষয় মাথায়
রাখতে হবে সেটি হল কর্মসংস্থানের বা কাজের নিশ্চয়তা বিষয়টি। অর্থাৎ আমরা দেশে
থাকা অবস্থায় সরকার আমাদের জন্য বিদেশে একটি কাজের ব্যবস্থা করে দিবে এবং তা
আমরা সঠিকভাবে দেশে থাকা অবস্থায় যাচাই-বাছাই করে বিদেশে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি
নিব। কর্মসংস্থানের বিষয়টি নিশ্চিতের জন্য আমাদেরকে বাংলাদেশে
নিযুক্ত আমাদের কাঙ্ক্ষিত দেশের দূতাবাসের নিকট হতে আমাদের সঠিক তথ্য
প্রদানের মাধ্যমে আমরা সঠিকভাবে জানতে পারবো যে আসলে কি আমাদের বিদেশে
কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে কিনা।
সুতরাং আমাদের বিদেশে যাওয়ার পূর্বে কর্মসংস্থানের বিষয়ে নিশ্চিত
হওয়া অতি জরুরী একটি বিষয়। কারণ আমরা যদি বিদেশে গিয়ে দেখি যে আমাদের
কোন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিত হয়নি তখন আমরা সেখানে গিয়ে যেকোনো
ধরনের বিপদে পড়তে পারি। তাই বিদেশে যাওয়ার পূর্বে আমরা আমাদের
কর্মসংস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত করে তারপরে বিদেশে যাব।
প্রবাসীদের জন্য বিদেশে সহায়তা কেন্দ্র
আমাদের প্রত্যেক প্রবাসী ভাইদের একটি বিষয় জানা উচিত সেটি হল বিদেশে প্রবাসীদের
সহায়তা বা সাহায্য প্রদানকারী সংস্থা অথবা কেন্দ্র কি। আমরা অনেক প্রবাসী
ভাইয়েরা এই বিষয়টা এমন কোন জ্ঞান রাখি না আর সেটা হতে পারে আমাদের প্রবাসীদের
জন্য অনেক বড় সমস্যার একটি কারণ। কেননা বিদেশে যাওয়ার পর আমরা যেকোনো
ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারি। এজন্য তাদের প্রত্যেকেরই জানা
উচিত বিদেশে যাওয়ার পর আমরা কোন সমস্যার সম্মুখীন হলে, আমরা সেইসব সমস্যা
খুব সহজেই কিভাবে সমাধান করতে পারব। আর প্রবাসী ভাইদের জন্য সাহায্যকারী সংস্থা
হল বিদেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের দূতাবাস।
আমরা যদি আমাদের বিদেশে থাকা অবস্থায় যেকোনো সমস্যা সমাধান পেতে চাই তাহলে
অবশ্যই আমাদের বিদেশে থাকা বাংলাদেশের দূতাবাসে গিয়ে সাহায্য জন্য আবেদন
করতে হবে। তাহলে খুব সহজেই আমরা বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে সাহায্য নিয়ে বিদেশে
যেকোন সমস্যার সমাধান করতে পারব। এজন্য দেশে থাকা অবস্থায় বিদেশে কোথায়
বাংলাদেশের দূতাবাস অবস্থিত এবং কিভাবে দূতাবাসের নিকট হতে সাহায্য নিতে হয় এই
সকল তথ্য বিদেশে যাওয়ার পূর্বে আমাদের জেনে নেওয়া উচিত।
সরকারিভাবে যে সকল দেশে যাওয়া যায়
সরকারিভাবে বিশ্বের সকল দেশেই কিছু কম বেশি যাওয়া যায়। ইউরোপ, এশিয়া মহাদেশ,
মধ্যপ্রাচ্য ও আমেরিকার সহ বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই সরকারিভাবে প্রবাসী
ভিসা, পড়ালেখার ভিসা ও ভ্রমণ ভিসা ইত্যাদি দিয়ে সব দেশেই সরকারিভাবে যাওয়া
যায়। আর সরকারিভাবে খুব অল্প পরিমাণে অর্থ দিয়ে বিশ্বের প্রায় যে কোন
দেশে যাওয়া যায়। এর মধ্যে কিছু অন্যতম দেশ রয়েছে যেগুলো দেশ প্রতিবছর একটি
নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রবাসী ভিসা দিয়ে থাকে তার মধ্যে অন্যতম হলো, সৌদি আরব,
কাতার, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইতালি, হংকং, যুক্তরাজ্য, কানাডা,
অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, দুবাই, সুইজারল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, জর্ডান ও
পোল্যান্ড ইত্যাদি দেশগুলো প্রতিনিয়ত বাংলাদেশ হতে প্রবাসী নিয়ে থাকে।
সুতরাং আমরা যদি সরকারিভাবে প্রবাসী ভিসায় বিদেশে যেতে চাই তাহলে অবশ্যই উপরুক্ত
দেশগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি দেশে আমাদের যেতে হবে। কেননা উপরোক্ত দেশগুলো
প্রতিবছর বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রবাসী নিয়ে থাকে। আর
আমরা প্রত্যেকেই জানি উপরোক্ত দেশগুলো বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি
ধনী দেশ এবং এসব দেশের আর্থিক উন্নয়ন প্রতিনিয়ত বেড়েই যাচ্ছে। সুতরাং
বিদেশে যাওয়ার আগে আমাদেরকে সঠিক দেশ নির্বাচন করে বিদেশে যেতে হবে।
সরকারিভাবে বিদেশে যাওয়ার খরচ সম্পর্কে জানুন
সরকারিভাবে প্রবাসী ভিসায় বিদেশে যেতে তেমন কোন বড় অংকের অর্থের
প্রয়োজন হয় না। খুব অল্প পরিমাণের অর্থ দিয়ে এবং খুব অল্প সময়ে প্রবাসী
ভিসায় বিদেশে যাওয়া যায়। কিন্তু আমাদের সঠিক নিয়ম এবং সঠিক জায়গায়
অর্থের ব্যবহার অথবা অর্থ প্রদান করতে হবে। কেননা সরকারি ভাবে বিদেশে যাওয়ার
সময় আমরা অনেক ধরনের দালালের চক্রে পড়তে পারি, আর আমরা যদি দালাল চক্রে
পড়ে যায় তাহলে তা হতে পারে আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় একটি ভুল। এতে করে অনেক
অর্থের ক্ষতিও হতে পারে। সুতরাং আমাদের দালালের চক্র থেকে রক্ষা পেতে বেশ কিছু
নিয়ম বা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তাহলে আমরা সরকারি ভাবে খুব অল্প পরিমাণে অর্থ
দিয়ে বিশ্বের যে কোন দেশে যেতে পারবো।
এজন্য প্রথমে আমাদেরকে নির্বাচন করতে হবে আমরা কোন দেশে যেতে ইচ্ছুক। তারপর
পাসপোর্ট, ভিসা প্রসেসিং করার জন্য বাংলাদেশে নিযুক্ত সেই দেশের দূতাবাসে
গিয়ে আমাদের ওই দেশে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করতে হবে। এরপর দূতাবাসের
নিযুক্ত সরকারি কর্মচারীগণ আমাদের কাঙ্খিত দেশের যাওয়ার যে সকল নিয়ম-কানুন
রয়েছে সেগুলো আমাদের সঠিকভাবে বুঝিয়ে দিলে, আমরা তা সঠিকভাবে জেনে তাদের
পরামর্শ অনুযায়ী সকল কার্যাবলী সম্পূর্ণ করলে খুব অল্প খরচে আমাদের কাঙ্খিত দেশে
যেতে পারবো। সরকারি ভাবে যেকোনো দেশে যাওয়ার জন্য ১,০০০০০ থেকে ৩,০০০০০ লক্ষ
টাকায় আমাদের কাঙ্ক্ষিত দেশে যেতে পারবো। তবে এটি দেশ এবং কাছের অভিজ্ঞতার উপরে
অর্ধের পরিমাণ কম বেশি হতে পারে।
শেষ কথাঃ সরকারিভাবে প্রবাসীদের বিদেশ যাওয়ার ১০টি প্রক্রিয়া
আমরা আমাদের আর্টিকেলে সরকারিভাবে প্রবাসীদের বিদেশ যাওয়ার ১০টি প্রক্রিয়া
সম্পূর্ণভাবে আলোচনা করেছি। আপনারা যারা খুব অল্প সময়ে এবং খুব অল্প পরিমাণ অর্থ
দিয়ে প্রবাসী ভিসায় বিদেশে যেতে ইচ্ছুক অথচ কিভাবে সরকারি ভাবে বিদেশে
যাওয়া যায় এর সম্পর্কে তেমন কোন জ্ঞান নেই তারা আমাদের আর্টিকেলটি প্রথম থেকে
শেষ পর্যন্ত সঠিকভাবে পড়লে বুঝতে পারবেন খুব অল্প সময়ে অল্প অর্থ দিয়ে
সরকারিভাবে বিদেশে যাওয়া নিয়ম। এছাড়াও বিদেশে যাওয়ার জন্য ভিসার সকল ঝামেলা
কাটিয়ে কিভাবে অল্প সময়ে ইউরোপ সহ আর অন্যান্য দেশের ভিসা পাওয়া যায় ইত্যাদি
এসব নিয়ে আমরা আমাদের আর্টিকেলে আলোচনা করেছি।
পরিশেষে বলা যায় প্রবাসী ভাইদের জন্য আমাদের আর্টিকেলটি হতে পারে তাদের জীবন
বদলের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। সুতরাং আপনারা যারা সরকারি ভাবে এ দেশে যেতে চান
তাদের প্রত্যেকেরই উচিত আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে দেখা। আর আমরা এটা বলতে পারি
আমাদের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণভাবে পরলে বিদেশ যাওয়ার সঠিক নিয়ম,
ভিসা প্রসেসিং ও স্বল্প অর্থ ব্যবহার করে বিদেশে যেতে পারবেন। আমাদের আর্টিকেলটি
আপনার ভালো লাগলে অবশ্যই অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url